জার্মানি আসার ১৫টি বৈধ উপায়
| |

জার্মানি আসার ১৫টি বৈধ উপায়

জার্মানি আসার ১৫টি বৈধ উপায় সম্পর্কে আজ আপনাদের সাথে আলোচনা করবো। যে উপায়গুলো জানা থাকলে আপনাদের অবৈধভাবে জার্মানি আসা লাগবেনা।

এই আর্টিকেলটি লেখার একটি উদ্দেশ্য হলো অনেকে জানতে চান যে, ভাই কি কি যোগ্যতা থাকলে বা কি কি উপায়ে জার্মানিতে আসা যায়।

সে সকল ভাই বোনদের জন্য আজ আমি ১৫ টিরও বেশি উপায় সম্পর্কে বলবো আপনাদের সাথে যে উপায়গুলো সম্পূর্ণ বৈধ।

এই আর্টিকেলটি শুধু আপনাদের ধারনা দেওয়ার জন্য যে, কি কি ধরনের ভিসা জার্মানিতে আছে। এর বাইরে আর কিছুই না।

আসুন তাহলে জানা যাক জার্মানিতে আসার বৈধ উপায়গুলো কি কি?

জার্মানি টুরিস্ট ভিসা

ইউরোপের ২৭টি দেশের যে একটি দেশের টুরিস্ট ভিসা পেলে সেটিকে সেনজেন ভিসাও বলে।

জার্মানিতে টুরিস্ট ভিসাটি হলো একটি সহজলভ্য ভিসা যেটা জার্মানির অন্যান্য ভিসার তুলনায় সহজেই পাওয়া যায়।

জার্মানিতে টুরিস্ট ভিসা হলে আপনি ইউরোপের অন্যান্য যে কোনো সেনজেনভুক্ত দেশ গুলোতে সহজেই ঘুরতে পারবেন।

এক কথায় আপনি সেনজেনভুক্ত যে কোনো একটি দেশের টুরিস্ট ভিসা পেলে অন্যান্য সেনজেন দেশগুলোতে ভিজিট করতে পারবেন।

টুরিস্ট ভিসার জন্য আপনি আবেদন করলে সর্বোচ্চ এক সপ্তাহ থেকে ২ সপ্তাহের মধ্যে হয়ে যায়। আগে তিন থেকে চার মাস লেগে যেতো।

টুরিস্ট ভিসার জন্য আপনার অবশ্যই ব্যাংক সলভেন্সি থাকা লাগবে। অন্যথায় আপনি কোনো দিনও জার্মানির টুরিস্ট ভিসা পাবেন না।

তাছাড়া আপনার যদি অন্যান্য দেশের ট্রাভেল হিস্টোরি থাকে সেক্ষেত্রে আপনার চান্সটা অনেকটা বেড়ে যাবে।

জার্মানি Student ভিসা

Student ভিসায় জার্মানিতে আসতে হলে আপনাকে কমপক্ষে ইন্টারমিডিয়েট পাশ করা লাগবে। এবং আপনার অবশ্যই একটি ব্লক একাউন্ট থাকা লাগবে।

একাউন্টে এগার হাজার দুইশত আট ইউরো EUR 11,208 বা তার থেকে একটু বেশি থাকা লাগে। আপনি জার্মানিতে মাস্টারস বা ব্যাচেলর যে কোনো ডিগ্রির জন্য আসতে পারবেন।

Student ভিসা সম্পর্কে আরো বিস্তারিত একটি আর্টিকেল নিয়ে আসবো।

জার্মানি ওয়ার্ক ভিসা

বর্তমানে জার্মানিতে প্রচুর পরিমাণে কর্মসংস্থানের সৃষ্টি হয়েছে। তাই জার্মানির ফেডারেল গভার্ণমেন্ট এর এক আলোচনায় তারা সিদ্ধান্ত নিয়েছে জার্মানির বিভিন্ন খাতে কর্মী চাহিদা পূরণ করার জন্য বিদেশ থেকে লোক হায়ার করবে।

জার্মানির ওয়ার্ক ভিসার জন্য আপনারা জার্মানির ইমিগ্রেশন ওয়েবসাইট বা জার্মানির বিভিন্ন জব পোর্টাল সাইটগুলো থেকে আবেদনের মাধ্যমে অফার লেটার নিতে পারেন।

জার্মানি ওয়ার্ক পারমিট ভিসা টাইপগুলো কি কি জানতে আর্টিকেলটি পড়ে আসুন।

জার্মানি জব সিকার ভিসা

জার্মানির জব সিকার ভিসাটি খুবই চমৎকার একটি ভিসা। এই ভিসার মাধ্যমে আপনি জার্মানিতে জব খুজার জন্য আসতে পারবেন।

যদি আপনি জব সিকার ভিসায় এসে জব অফার পেয়ে যান তাহলে সেটি ওয়ার্ক পারমিট ভিসায় রূপান্তর করা যাবে।

জার্মানি বিসনেস ভিসা

এই ভিসাটি মূলত আপনার যদি যথেষ্ঠ মানি সলভেন্সি থাকে তাহলে আপনি সেদেশে বিসনের ভিসার জন্য আবেদন করে বিসনেস করতে পারবেন।

ফ্যামিলি রিইউনিফিকেশন ভিসা

আপনার যদি জার্মানিতে আত্নিয়-স্বজন থাকে যেমনঃ স্বামী বা স্ত্রী, সন্তান, মা-বাবা ইত্যাদি যদি কেউ থাকে তাহলে আপনার ফ্যামিলি রিইউনিফিকেশন ভিসা নিয়ে আসতে পারেন।

এই আপনারা চাইলে ভিজিট ভিসা নিয়েও ফ্যামিলির কাছে আসতে পারেন। তবে অনেক ভেরিফিকেশনের জন্য এই ভিসাটি পেতে কিছুটা বিলম্ব হয়।

Germany EU Blue Card Visa

EU Blue Card কার্ড জার্মানির ইউরোপিয়ান কমিশন থেকে প্রদান করে। Germany EU Blue Card এর মাধ্যমে আপনি জার্মানিতে ৪ বছরের জন্য থাকতে পারবেন বা কাজ করতে পারবেন।

Germany AU Pair Visa

এই ভিসাটি মূলত যাদের বয়স ১৮ থেকে ২৬ শুধু তাদের জন্য অর্থাৎ ২৬ বছরের উপরের কেউ এই ভিসার জন্য আবেদন করতে পারবেন না।

বাচ্চা দেখাশুনার জন্য এই ভিসাটি প্রদান করা হয়। ছেলে মেয়ে উভয়ই এই ভিসার জন্য আবেদন করতে পারবে। তবে মেয়েদেরই বেশি প্রাধান্য দেয় হয়।

এই পেশায় আসার জন্য আপনাকে জার্মান ভাষার কোর্স করতে হবে। A1 জার্মানি কোর্সটি করা থাকলে ৯৯% সম্ভাবনা থাকে ভিসা পাওয়ার।

ফ্রিল্যান্সার ভিসা

আমরা জানি আপওয়ার্ক, ফাইভার, ফ্রিল্যান্সার, পিপলস পার আওয়ার ইত্যাদি বিভিন্ন ফ্রিল্যান্সিং মার্কেট প্লেস গুলোতে সারা বিশ্ব থেকে অনেক ফ্রিল্যান্সার কাজ করে।

জার্মানিতেও বিভিন্ন এজেন্সি আছে যেখানে আপনি ফ্রিল্যান্সিং পেশায় আপনার একটি শক্ত ক্যারিয়ার গড়তে পারেন।

ভিসা ফর মেডিক্যাল ট্রিটমেন্ট

আমরা জানি মেডিকেল বা চিকিৎসা বিজ্ঞানের জন্য জার্মানি বিশ্বের অন্যতম দেশ যেখানে আপনি চাইলে চিকিৎসা বিজ্ঞানের যে কোনো একটি সেক্টরে আবেদন করতে পারেন।

গেস্ট সাইন্টিস্ট ভিসা

সত্যি বলতে আমি এই ভিসাটি খুব ডিটেইলস জানিনা। আমাদের দেশের শিক্ষা ব্যবস্থা অনুযায়ী আমার মনে হয়না এটা খুব একটা প্রযোজ্য।

এই ভিসা নিয়ে আরো বিস্তারিত জানতে চাইলে আপনারা গুগলে একটু সময় দিতে পারেন হয়তো কোনো রিসোর্স পেয়ে যাবেন ইনশাআল্লাহ।

তবে এই ভিসাটি অন্যান্য দেশের জন্য অনেক কাজের এবং উন্নত দেশগুলো থেকে অনেক সাইন্টিস্ট জার্মানিতে এই ভিসা নিয়ে আসে।

ল্যাংগুয়েজ কোর্স ভিসা

এই ভিসায় বাংলাদেশ থেকে এখনও কেউ এসেছে কিনা আমার জানা নেই। তবুও আপনারা চাইলে চেষ্টা করে দেখতে পারেন।

আইটি স্পেশালিস্ট

আইটি স্পেশালিস্ট যারা আছেন তাদের জন্য কিন্তু খুবই খুশির একটি খবর কারণ, আপনারা চাইলে শুধু এই নির্দিষ্ট ক্যাটাগরির ভিসায় আবেদন করে জার্মানিতে আসতে পারেন।

কালচারাল বা আর্টিস্ট ভিসা

যারা চলচিত্রের সাথে সম্পৃক্ত আছেন বা যারা আর্টিস্ট বা কো-আর্টিস্ট তারা এই ভিসার জন্য আবেদন করতে পারেন। জার্মানিতেও বিভিন্ন ধরনের কালচারাল প্রোগ্রাম অনুষ্ঠিত হয়।

আউসবিল্ডুং বা ট্রেনিং বা ইন্টার্নশিপ ভিসা

আপনারা বিভিন্ন কোর্স করার জন্য আউসবিল্ডুং বা ট্রেনিং বা ইন্টার্নশিপ ভিসাতে আবেদন করতে পারেন।

আমি আউসবিল্ডুং বা ট্রেনিং বা ইন্টার্নশিপ ভিসা এর জন্য বিস্তারিত একটি আর্টিকেল লিখবো। যেখানে অল্প কিছু যোগ্যতা থাকলে আপনাদের ভিসার সাকসেস রেট হবে শতভাগ ইনশাআল্লাহ।

সেচ্ছাসেবি ওয়ার্ক ভিসা Fellowship

এই ভিসাটি মুলত আপনারা যারা বিনামূল্যে সেবা বা সেচ্ছাসেবি হিসেবে কাজ করতে চান বা দুস্থ মানুষের জন্য কাজ বা সহায়তা করতে চান তারা আবেদন করতে পারেন।

যেমন ধরুন রেড ক্রস কিন্তু সেচ্ছাসেবিদের নিয়ে কাজ করে। বিস্তারিত জানার জন্য ICRC বা রেড ক্রস এর ওয়েবসাইটটিতে ভিজিট করে আসতে পারেন।

সবশেষ কথা

আমি আপনাদের আবারো একটি বিষয় অবগত করতে চাই, জার্মানি আসার ১৫টি বৈধ উপায় আর্টিকেলটি শুধুই জার্মানির বিভিন্ন ধরনের ভিসা টাইপ নিয়ে আলোচনা করেছি।

তবে আমি আরো একটি আর্টিকেল ইতিমধ্যেই লিখেছি যেখানে জার্মানির বিভিন্ন ওয়ার্ক পারমিট ভিসা নিয়ে আলোচনা করেছি।

তবে শুধুমাত্র জার্মানি ওয়ার্ক পারমিট ভিসা বা কাজের ভিসা নিয়ে কিভাবে জার্মানিতে যাবেন সে নিয়েও ধারাবাহিকভাবে আর্টিকেল লিখবো ইনশাআল্লাহ।

Slide Up
x

Similar Posts

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *