অস্ট্রেলিয়া কাজের ভিসা আবেদন Subclass 190
অস্ট্রেলিয়া কাজের ভিসা আপনার অভিজ্ঞতা থাকলেই কোনো প্রকার সিভি বা কভার লেটার ছাড়াই Subclass 190 Visa এর জন্য আবেদন করতে পারবেন।
Australia New South Wales State এর রাজধানীর নাম সিডনি। যেখানে বর্তমানে দক্ষ শ্রমিকের প্রচুর জন্য কাজের কোঠা রয়েছে।
New South Wales State তারা যে ভিসা দিচ্ছে তার নাম হলো Skill Nominated Visa Subclass 190. এবং এটি একটি Permanent Visa. অর্থাৎ এই ভিসাটি যারা পাবে তারা শুরু থেকেই অস্ট্রেলিয়াতে স্থায়ীভাবে থাকতে পারবে।
তারা তাদের পরিবারসহ থাকতে পারবে। এবং অস্ট্রেলিয়ার সরকার কতৃক যে সকল সুযোগ সুবিধা আছে তারা তা ভোগ করতে পারবে।
আজকের এই আর্টিকেলে আমি আপনাদের অস্ট্রেলিয়ান সরকারের অথেনটিক এবং অফিসায়াল ওয়েবসাইটের লিংকসহ দিয়ে দিবো।
অস্ট্রেলিয়া কাজের ভিসা খরচ
আমি শুরুতেই আপনাদের অস্ট্রেলিয়া কাজের ভিসা খরচ নিয়ে বলে দিতে চাই। কারণ আমি চাই আপনারা আর্টিকেলটি আগ্রহ নিয়ে পড়ুন নিচে আরো অনেক গুরুত্বপূর্ন আলোচনা করা হয়েছে যা আপনাকে সত্যি একটি সঠিক গাইডলাইন দিবে ইনশাআল্লাহ।
প্রতি আবেদনকারীর জন্য ভিসা ফি AUD 4640.00 যা বাংলাদেশী টাকায় প্রায় তিন লক্ষ উনত্রিশ হাজার নয়শত চল্লিশ (৩,২৯,৯৪০/-) টাকা। State Nomination Fee হচ্ছে AUD 300 যা বাংলাদেশী টাকায় প্রায় ২২,০০০ টাকার মতো। মোট তিন লক্ষ পঞ্চাশ হাজার (৩,৫০,০০০/-) টাকার মতো প্রায়।
অস্ট্রেলিয়া কাজের ভিসা বিস্তারিত আলোচনা
এই ভিসায় আবেদনের জন্য প্রথমত আপনাদের যেতে হবে Australia New South Wales এর রাজ্য সরকারের ওয়েবসাইটে। সেখানে গিয়ে আপনারা দেখতে পাবেন Skill Nominated Visa (Subclass 190).
অথবা আপনারা সরাসরি এই লিংকে ক্লিক করেও যেতে পারেন – Skill Nominated Visa (Subclass 190) সেখানে কি কি যোগ্যতা লাগবে তা দেখতে পাবেন। নিচে স্ক্রিনশটে দেখানো লিংকে ক্লিক করবেন অথবা এই কিওয়ার্ড দিয়ে সার্চ করুন “Eligible skilled occupation list”

Skilled occupation list এর ড্রপ ডাউন মেনু থেকে আপনার পেশা এবং 190 – Skilled Nominated (subclass 190) সিলেক্ট করুন। নিচের স্কিনশটটি ফলো করুন।

আপনার দক্ষতা অনুযায়ী কাজের জন্য সার্চ করুন। যেমন আমি কনস্ট্রাকশন একটি জবের জন্য উদাহরণ দিয়ে দেখিয়েছি।
subclass 190 ভিসায় কাজের ক্যাটাগরী
190 – Skilled Nominated (subclass 190) এই ভিসার আওতায় তারা যে সকল কাজের জন্য কর্মী নিবে তার লিস্ট নিচে দেয়া হলো।
- সাস্থ্য (Health)
- শিক্ষা (Education)
- তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি (Information and Communication Technology)
- ইনফ্রাসট্রাকচার (Infrastructure)
- কৃষি (Agriculture)
উপরোক্ত যোগ্যতা যদি আপনার থাকে তাহলে আপনি আবেদন করতে পারবেন তাছাড়া আপনার এই subclass 190 এর আওতায় আবেদন করার কোনো সুযোগ নেই।
আপনার যদি কোনো একটি যোগ্যতা থাকে তাহলে আপনি অনলাইনে অস্ট্রেলিয়ার ইমিগ্রেশন ওয়েবসাইটের মাধ্যমে Skill Select এর Expression of Interest Submit করতে হবে। উক্ত পেজের নিচের অংশে স্ক্রল করে “Submit an EOI” বাটনে ক্লিক করুন।
এটি একটি প্রিলিমিনারিটি এপ্লিকেশনের মতো। এটি ইমেইল একাউন্ট তৈরী করার মতোই সহজ। আপনারা কিছু প্রশ্নের উত্তর দিয়ে একাউন্টটি তৈরী করতে পারবেন। প্রশ্নের উত্তর গুলো খুব সহজ।
অস্ট্রেলিয়া কাজের ভিসা আবেদন প্রক্রিয়া
Expression of Interest Submit করার জন্য আপনাদের কোনো প্রকার ফি প্রদান করা লাগবেনা। এটা সম্পূর্ণ ফ্রি।
আপনি যখন Skill Select এর Expression of Interest Submit করার পর New South Wales state এর সরকার তাদের প্রিলিমিনারিটি এপ্লিকেশন গুলো চেক করবে।
যদি আপনার দেয়া তথ্যগুলো তাদের প্রয়োজনের সাথে মিলে তাহলে তারা আপনাকে ইমেইলে একটি লিংকের মাধ্যমে ইনভাইটেশন পাঠাবে।
ইনভাইটেশন আসতে কতদিন সময় লাগবে এটা নিশ্চিত করে তাদের ওয়েবসাইটে বলা নেই তবে ১ বছরের কম সময় লাগবে।
ইনভাইটেশন লিংক পাওয়ার পর তাদের স্পন্সরশিপের জন্য আবেদন করতে হবে। এবং সেটাও Skill Select এর মাধ্যমেই করতে হবে। তারা সেই লিংকটি ইনভাইটেশন ইমেইলের মধ্যেই দিয়ে দিবে।
এখানে আবেদন করার সময় আপনার নির্দিষ্ট কিছু ইনফরমেশন প্রদান করা লাগবে এবং নির্দিষ্ট ফি ও প্রদান করা লাগবে। আর এই ফি হচ্ছে AUD 300 যা বাংলাদেশী টাকায় প্রায় ২২,০০০ টাকার মতো।
এই পেমেন্টটি করতে হবে উক্ত লিংকের মাধ্যমে যেখানে ক্রেডিট কার্ড দিয়ে সহজে করা যাবে। আর এই ফি শুধু আপনার একার জন্য আপনার ফ্যামিলির কারো জন্য আলাদা ফি দিতে হবেনা।
এই আবদন শেষ হওয়ার ৬ মাসের মধ্যে তারা আপনাকে ভিসার জন্য আবেদনের জন্য ইনভাইটেশন পাঠাবে। এবং আপনাকে Skill Select এর Expression of Interest একাউন্টে লগিন করে ভিসার জন্য আবেদন করতে হবে।
অস্ট্রেলিয়া কাজের ভিসার যোগ্যতা
১। বয়সসীমা
Skill Nomination Visa Subclass 190 তে আবেদন করার জন্য আবেদনকারীর বয়স অবশ্যই ৪৫ বছরের নিচে হতে হবে। সর্বোচ্চ বয়স ৪৪ বছর হলে আবেদন করতে পারবেন।
২। কাজের দক্ষতা
New South Wales State Government থেকে যে যোগ্যতাগুলো তারা উল্লেখ করেছেন প্রার্থীকে অবশ্যই সে যোগ্যতাগুলোর মধ্যে যে কোনো একটি বিষয়ে অভিজ্ঞ হতে হবে। যা নিচে দেখানো হয়েছে। অভিজ্ঞতা বা দক্ষতা ছাড়া আপনি Subclass 190 এর জন্য আবেদন করতে পারবেন না।
- সাস্থ্য (Health)
- শিক্ষা (Education)
- তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি (Information and Communication Technology)
- ইনফ্রাসট্রাকচার (Infrastructure)
- কৃষি (Agriculture)
৩। Skill Assessments
আপনার যে কাজের উপর যোগ্যতা আছে তা Australian Skill Assessments প্রতিষ্ঠান থেকে অর্থাৎ অস্ট্রেলিয়ার যোগ্যতা যাচাইকারী কোনো প্রতিষ্ঠান থেকে যাচাই করাতে হবে। VETASSESS একটি স্কিল এসেসমেন্ট প্রতিষ্ঠান, চাইলে এদের সাথেও যোগাযোগ করতে পারেন।
সেখানে আপনি কি কাজ জানেন, আপনার ইংরেজী দক্ষতা ইত্যাদি আরো প্রয়োজনীয় কাগজপত্র প্রমানস্বরূপ তাদের কাছে সাবমিট করতে হবে। তারপর তারা আপনার এগুলো যাচাই করবে এবং আপনি যোগ্য কিনা তা আপনাকে জানাবে।
আপনি তাদের সাথে যোগযোগ করলে তারা আপনার প্রয়োজনীয় কাগজপত্র কি কি লাগবে বা কত টাকা পেমেন্ট করতে হবে আপনাকে বিস্তারিত বলে দিবে।
Skill Assessments নিয়ে বিস্তারিত জানতে আর্টিকেলটি পড়ে আসুন।
৪। ইংরেজী দক্ষতা
যেহেতু অস্ট্রেলিয়া একটি English Speaking Country তাই ইংরেজীতে আপনাকে অবশ্যই কথা বলার মতো দক্ষতা থাকতে হবে। অর্থাৎ IELTS Score কমপক্ষে 6 থাকতে হবে। অথবা IELTS সমমান যে কোর্সগুলো আছে যেমন PTE, TOEFL ইত্যাদি।
তবে কিছু কিছু Skill এর ক্ষেত্রে IELTS ছাড়া অন্য কিছু তারা প্রাধান্য দেয় না। আবার কিছু কিছু Skill তারা IELTS Requirement আর একটু হাই স্কোর চায় যেমন Education, Health etc.
৫। পয়েন্ট
Skill Nomination Visa Subclass 190 তে আবেদন করার জন্য আপনার কমপক্ষে ৬৫ পয়েন্ট লাগবে। পয়েন্টগুলো গণনা করা হবে তা নিচে আলোচনা করা হলো।
- আবেদনকারীর বয়স
- শিক্ষাগত যোগ্যতা
- অভিজ্ঞতা বা দক্ষতা
- ইংরেজী দক্ষতা (IELTS Score)
- ইত্যাদি আরো কিছু বিষয় থেকে তারা পয়েন্টগুলো গণনা করবে।
অস্ট্রেলিয়া স্কিল মাইগ্রেশন ভিসার পয়েন্ট টেবিল এবং পয়েন্ট কিভাবে গণনা করা হয় তা বিস্তারিত জানতে আর্টিকেলটি পড়ে আসুন।
৬। পুলিশ ক্লিয়ারেন্স
পুলিশ ক্লিয়ারেন্সের সার্টিফিকেট সংগ্রহ করতে হবে।
৭। মেডিকেল টেস্ট
অবশ্যেই মেডিকেল টেস্টের রিপোর্ট লাগবে।
উপসংহার
এই আর্টিকেলটিতে অস্ট্রেলিয়া কাজের ভিসার বিস্তারিত আলোচনা করা হয়েছে। তবে আবেদনের সম্পূর্ণ প্রক্রিয়াটি আলোচনা না করা হলেও আবেদনের প্রসেসগুলো কিভাবে সম্পন্ন হয় সে বিষয়ে আলোচনা করা হয়েছে।
তবে আবেদনের পুরো প্রক্রিয়াটি নিয়ে আমার আরো একটি আর্টিকেল রয়েছে আপনারা সে আর্টিকেলটি পড়ে আসতে পারেন।
অস্ট্রেলিয়া কাজের ভিসা নিয়ে বিস্তারিত আরো জানতে চাইলে নিচের আর্টিকেলগুলো পড়ুন।
- অস্ট্রেলিয়া স্কিল এসেস্টমেন্ট টেস্ট
- অস্ট্রেলিয়া কেয়ারার ভিসা কোম্পানী লিস্ট
- অস্ট্রেলিয়া কেয়ারার ভিসা বেতন এবং খরচ
- ওয়ার্ক পারমিট ভিসা ইন্টারভিউ এর ১০টি কমন প্রশ্ন
FAQ
ভিসা ফি প্রায় ৩,২৯,৯৪০/- টাকা এবং স্টেট নমিনেশন ফি ২২,০০০/- টাকা। মোট তিন লাখ পঞ্চাশ হাজার টাকার মতো লাগবে।
IELTS Score কমপক্ষে 6 থাকতে হবে। অথবা IELTS সমমান যে কোর্সগুলো আছে যেমন PTE, TOEFL ইত্যাদি।
অস্ট্রেলিয়ার যোগ্যতা যাচাইকারী কোনো প্রতিষ্ঠান থেকে যাচাই করাতে হবে। VETASSESS একটি স্কিল এসেসমেন্ট প্রতিষ্ঠান, চাইলে এদের সাথেও যোগাযোগ করতে পারেন।
অস্ট্রেলিয়ার ইমিগ্রেশন ওয়েবসাইটের মাধ্যমে Skill Select এর Expression of Interest Submit করতে হবে।