জার্মানি ওয়ার্ক পারমিট ভিসা টাইপ
জার্মানি ওয়ার্ক পারমিট ভিসা কত ধরনের হয়, কারা আবেদন করতে পারবে, কি কি রিকয়ারমেন্ট থাকে বা কি কি ডকুমেন্ট লাগবে এবং খরচ কত হবে।
আসসালামু ওয়ালাইকুম। সবাই কেমন আছেন? আজকে আমরা আলোচনা করবো জার্মানি ওয়ার্ক পারমিট ভিসা নিয়ে।
যারা জার্মানিতে ওয়ার্ক পারমিট নিয়ে যেতে চান বা অনেকদিন ধরে চেষ্টা করছেন তাদের জন্য সেনজেন দেশ জার্মানি নিয়ে এলো দারুন সুযোগ।
ইউরোপের সেনজেনভুক্ত দেশের তালিকা জানতে আর্টিকেলটি পড়ুন।
বর্তমানে জার্মানিতে কয়েকটি খাতে বেশ কিছু সংখ্যাক কর্মী সংকট আছে তা আনুমানিক প্রায় দশ লাখ। তারা এই সংকটটি কাটাতে বিদেশ থেকে কর্মী হায়ার করবে।
তাই আপনারা যদি জার্মানিতে ওয়ার্ক পারমিটের জন্য সঠিকভাবে আবেদন করতে পারেন ইনশাআল্লাহ আপনাদের পক্ষেও ওয়ার্ক পারমিট পাওয়াটা কঠিন হবেনা।
আসুন সরাসরি মূল আলোচনায় চলে আসি।
জার্মানি ওয়ার্ক পারমিট ভিসা কত ধরনের হয়
German EU Blue Card
এই German EU Blue Card কার্ডটি জার্মান ইউরোপিয়ান কমিশন থেকে প্রদান করে। এই German EU Blue Card এর মাধ্যমে আপনি জার্মানিতে ৪ বছরের জন্য থাকতে পারবেন।
অর্থাৎ আপনি German EU Blue Card মাধ্যমে জার্মানিতে ৪ বছরের জন্য ওয়ার্ক পারমিট পাবেন।
German Permanent Settlement Work Permit
Non European যে কোনো নাগরিকও এই German Permanent Settlement Work Permit এর জন্য আবেদন করতে পারবেন।
এই Work Permit নিযে আপনি জার্মানিতে কোনো ধরনের বাধা বিপত্তি ছাড়া ৫ বছরের জন্য কাজ করে যেতে পারবেন বা থাকতে পারবেন।
German Job Seeker Visa
এই ভিসাতে আপনি সেখানে গিয়ে জব সার্চ করতে পারবেন। অর্থাৎ আপনি জার্মানিতে Job Seeker Visa নিয়ে যাওয়ার পর জব খুজতে পারবেন এবং সেখানে চাকরি করতে পারবেন।
তাছাড়াও এই ভিসার মাধ্যমে আপনি চাকরি পাওয়ার পর ওয়ার্ক পারমিট ভিসার জন্য আবেদন করতে পারবেন। যেটা আপনার জন্য খুবই চমৎকার একটি সুযোগ সৃষ্টি করবে।
German Special Employment Visa
এই ক্যাটাগরীর জবের জন্য জার্মানি বিশ্বের সকল স্কিল প্রফেশনের লোকদের আমন্ত্রন জানাচ্ছে তাদের দেশে জব করার জন্য।
আপনি এই ভিসায় আবেদন করার জন্য অবশ্যই হাই স্কিলড হতে হবে যেখানে একটি বৈধ জব অফার সহ আপনার বাৎসরিক বেতন হতে হবে কমপক্ষে ৮৪ হাজার ৪০০ ইউরো।
German Self Employment Visa
এই Self Employment Visa জন্য ফ্রিল্যান্সাররা আবেদন করতে পারবেন। তাছাড়াও জার্মানিতে বিসনেস করার জন্য এই ভিসার জন্য আবেদন করতে পারবেন।
যাদের নতুন কোনো বিসনেস করার ইচ্ছা আছে জার্মানিতে তারা চাইলে Self Employment Visa তে আবেদন করতে পারেন।
এটি একটি উন্মুক্ত পেশা যেটা আপনি নিজ উদ্যোগে করার জন্য আবেদন করতে পারবেন।
তবে একটি বিষয় মাথায় রাখবেন ফ্রিল্যান্সিং এর জন্য আপনার বিষদ জ্ঞান বা স্কিল দুটোই থাকতে হবে। এবং বিজনেস করার জন্য যথেষ্ঠ ইনভেস্ট ফান্ড থাকতে হবে।
জার্মানি ওয়ার্ক পারমিট ভিসা রিকয়ারমেন্ট
- প্রথমত আপনার একটি বৈধ পাসপোর্ট থাকতে হবে যার মেয়াদ কমপক্ষে ৬ মাস হতে হবে।
- ট্রাভেল ডকুমেন্ট থাকলে খুবই ভালো।
- আপনাকে অবশ্যই একটি জব অফার ম্যানেজ করতে হবে বা জব কন্টাক্ট থাকতে হবে।
- হেলথ ইনসিউরেন্স থাকা লাগবে।
- পুলিশ ক্লিয়ারেন্স থাকতে হবে।
- জার্মানি ভাষা জানা থাকলে সেটার প্রুফ দেখাতে হবে। অনেক জার্মানি কোম্পানী আছে যারা জার্মানি ভাষাটাকে প্রধান্য দিয়ে থাকে।
আপনারা যদি জার্মানি কোর্সটি করে নিতে পারেন সেটা আপনাদের জন্য বিশাল একটি সুবিধা বয়ে আনবে।
জার্মানি ওয়ার্ক পারমিট ভিসা আবেদন
জার্মানি ওয়ার্ক পারমিট ভিসার জন্য কারা কিভাবে আবেদন করতে পারবে সে বিষয়ে একটু আলোচনা করা দরকার।
কারণ আপনি যদি না জেনে থাকেন আপনার এই ভিসাতে আবেদন করার জন্য ইলিজিবিলিটি বা যোগ্যতা আছে কিনা তাহলে আপনি আবেদন করার পর হতাশ হয়ে যাবেন।
প্রথমত জানবো কোন কোন দেশ গুলোকে জার্মানির এই ওয়ার্ক ভিসাগুলো নিতে হবেনা যারা সরাসরি কাজের জন্য আবেদন করতে পারবে।
যেমনঃ ইউরোপিয়ান দেশগুলো, কানাডা, অস্ট্রেলিয়া, আমেরিকা, নিউজিল্যান্ড এবং সাউথ কোরিয়া ইত্যাদি দেশ সমূহ।
এই দেশগুলো ছাড়া অন্যান্য দেশগুলোকে ওয়ার্ক পারমিটের জন্য আবেদন করতে হবে। ওয়ার্ক পারমিট পাওয়ার পর আপনি জবের জন্য আবেদন করতে পারবেন।
তবে জব সিকার যে ভিসাটি আছে সে ভিসাতে আবেদন করার জন্য আপনাদের কোনো ওয়ার্ক পারমিট এর প্রয়োজন হবেনা।
এক্ষেত্রে আপনাদের যেটি করতে হবে প্রয়োজনীয় ডকুমেন্টগুলো ব্যবস্থা করে আপনার নিকটস্থ যে জার্মান এম্বাসী আছে সেখানে একটি এপোয়েনমেন্ট নিতে হবে।
এরপর সমস্ত ডকুমেন্টস গুলো জমা দিয়ে ইন্টারভিউ সম্পন্ন করে ভিসার জন্য আবেদন করতে হবে। ভিসার আপডেট পেতে আপনার এক মাস থেকে তিন মাসের মতো সময় লাগবে ইনশাআল্লাহ।
জার্মানি ওয়ার্ক পারমিট ভিসা খরচ
German Self Employment Visa এর জন্য ভিসা ফি হবে €75 যা বাংলাদেশী টাকায় প্রায় ৯,১৩৯/- টাকার মতো।
সাধারণত জার্মানির ওয়ার্ক ভিসা যদি আপনি পান সেটা এক বছরের জন্য হয়ে থাকে। তাছাড়াও এটি নির্ভর করে ভিসার বিভিন্ন ক্যাটাগরীর উপর।
সবশেষ কথা
জার্মানির ওয়ার্ক পারমিট ভিসা কত ধরনের হয়ে থাকে মূলত আজ এই বিষয়টি নিয়েই আলোচনা করার চেষ্টা করেছি। আশাকরি আপনারা আর্টিকেলটি ভালোভাবে বুঝতে পেরেছেন।
তাছাড়াও সেলফ এমপ্লয়মেন্ট ভিসার জন্য কত টাকা খরচ সেটিও জানােনোর চেষ্টা করেছি। কারা কারা সরাসরি জার্মান ওয়ার্ক ভিসার জন্য আবেদন করতে পারবেন তাও উল্লেখ করেছি।
ভিসা আবেদনের জন্য রিকয়ারমেন্ট এবং ডকুমেন্টসগুলো কি কি লাগবে সেটিও আলোচনা করেছি।
বিস্তারিত আরো জানতে জার্মানির ফেডারেল গভার্নমেন্ট ওয়েবসাইটটি ভিজিট করে আসেতে পারেন।