ইতালি কাজের ভিসা আবেদন পক্রিয়া
| |

ইতালি কাজের ভিসা আবেদন পক্রিয়া

ইতালি কাজের ভিসা আবেদন কিভাবে করবেন, নিজে নিজে আবেদন করা যায় কিনা! আজকে আমরা খুটিনাটি সকল বিষয়াদি সম্পর্কে জানবো।

আপনারা যারা সম্প্রতি বা এই মুহুর্তে ইউরোপ যাওয়ার কথা ভাবছেন তাদের কাছে আকর্ষণীয় একটি দেশ হচ্ছে ইতালি। যার কথা শুনলেই পাগলের মতো আমরা সুযোগ গুলো লুফে নিতে চাই।

বর্তমানে আমরা অনেকে দালালের মাধ্যমে ইতালি যাওয়ার জন্য একরকম পাগল প্রায়। কারণ আমাদের ধারণা দালাল ছাড়া মনে হয় ইতালি কাজের ভিসা আবেদন করার আর কোনো পথ খোলা নেই। তাই যে কোন মাধ্যম পেলেই হলো, টাকা নিয়ে রেডি হয়ে যাই।

কিন্তু আপনি জানেন কি? কত মানুষ এভাবে তাদের টাকা পয়সা এবং জীবন নাশের ঝুকি নিয়ে সর্বশান্ত হয়ে পথে বসেছে! না আপনি সঠিক নিয়ম-কানুন জানেন না বলেই আজ আপনাদের কোনো না কোনো ভাই-বোনের এই দুর্দশা হয়েছে।

এর কারণ হলো একটাই আমরা বাঙ্গালীরা অলস সঠিক কোনো তথ্য না জেনেই, আবেদন প্রক্রিয়ার অন্য কোনো উপায় আছে কিনা তা যাচাই না করেই দালালের কাছে তুলে দিচ্ছি লক্ষ লক্ষ টাকা।

তাই আপনাদের জন্য আজ এই আর্টিকেলটি তৈরী করেছি যাতে আপনারা আর কেউ ইতালি ভিসা নিয়ে প্রতারণার ফাঁদে না পড়েন।

এই আর্টিকেলে আপনারা জানতে পারবেন কিভাবে ইতালির ওয়ার্ক পারমিট ভিসার জন্য আবেদন করা যায়। আজকের আর্টিকেলটি পড়ার পর দালালরা আপনাকে আর ভুল-ভাল তথ্য দিয়ে ঠকাতে পারবেনা।

প্রথমে আমরা জানবো ইতালি ওয়ার্ক পারমিট ভিসা ক্যাটাগরী গুলো। ইতালিতে বর্তমানে দুটি ক্যাটাগরীতে ভিসা প্রদান করা হচ্ছে।

  • সিজনাল ওয়ার্ক পারমিট ভিসা
  • নন সিজনাল ওয়ার্ক পারমিট ভিসা

সিজনাল এবং নন সিজনাল ভিসা নিয়ে আমি ইতিমধ্যেই আমার একটি আর্টিকেল পাবলিশ করেছি আপনার চাইলে আর্টিকেলটি পড়ে আসতে পারেন।

সেখানে আপনার যে কোনো দেশ থেকে ইতালি যাওয়ার উপায় সমূহ জানতে পারবেন। যেমনঃ সৌদি আরব, ওমান, কাতার, দুবাই, কুয়েত, মালয়েশিয়া, ইউরোপ সহ বিশ্বের সকল দেশ থেকে।

সিজনাল ওয়ার্ক পারমিট ভিসা

বর্তমানে দালালরা যত ভিসা দিচ্ছে তার ৯৯.৯ শতাংশ সিজনাল ভিসা এবং যারা ভিসা সম্বন্ধে খুব একটা ভালো বুঝেননা তাদের নন সিজনাল ভিসা বা পারমানেন্ট কাজের ভিসা বলে অনেক বেশি টাকা হাতিয়ে নিচ্ছে।

হয়তো এই সিজনাল ভিসাতে অনেকে সেই দালালের মাধ্যমে যেতে পারছেন আবার অনেকে প্রতারণার শিকার হয়ে টাকা পয়সা হারিয়ে দালালের পিছে পিছে ঘুরছেন। অনেকে হয়তো টাকা দেয়ার পর দালালকেই খুজে পাচ্ছেন না।

আসলে সিজনাল ভিসাটি মুলত ৬ মাস থেকে ১ বছরের একটি ভিসা যা ইতালিয়ান সরকারের অনুমতিক্রমে ঐ দেশের কোনো একটি কোম্পানী তার কর্মী সংকট পূরণের জন্য বিশ্বের অন্যান্য দেশ থেকে নিয়োগ করে।

নন সিজনাল ওয়ার্ক পারমিট ভিসা

নন সিজনাল ভিসা বা স্পন্সর ভিসা যার মেয়াদ ১ বছরের অধিক হয়ে থাকে। এই ভিসায় আসলে আপনি একটি নির্দিষ্ট সময়ের পর পারমানেন্ট ভিসার জন্য আবেদন করতে পারবেন।

সিজনাল ভিসায়ও আবেদন করা যাবে যদি আপনার কোম্পানী আপনাকে পারমানেন্ট হওয়ার জন্য সাহায্য করে। এটা কোম্পানীর উপর নির্ভর করে।

এবার আমরা জানবো সিজনাল ভিসা, নন সিজনাল ভিসা বা স্পন্সর ভিসা যাই বলেন না কেন এটি কোন প্রক্রিয়ায় হয়ে থাকে সে বিষয়টি।

ইতালি কাজের ভিসা প্রক্রিয়া বা আবেদন

আমি আপনাদের কিছু ধারণা দিচ্ছি আসলে পুরো প্রসেসটি কিভাবে সংঘঠিত হয়। যদিও আমি এই কথাগুলো নিয়ে আমার পূর্বের একটি আর্টিকেলে আলোচনা করেছি। আবেদন প্রক্রিয়ার বিস্তারিত জানতে এই লিংকে ক্লিক করুন।

১। প্রথম প্রক্রিয়া হলো একটি কোম্পানী আপনাকে হায়ার করবে।

২। কোম্পানীটি তাদের নিজস্ব ইমেইল আইডি দিয়ে তাদের প্রসাসনীক অফিস (প্রিফেতুরা) সেখানে আপনাকে হায়ার করার জন্য আবেদন করবে । সেখানে আপনার পাসপোর্ট থেকে শুরু করে প্রয়োজনীয় ডকুমেন্টস গুলো জমা দিবে।

৩। আপনার জন্য আবেদন করার পর প্রসাসনীক অফিস (প্রিফেতুরা) থেকে একটি নুলাবস্তা বা ছাড়পত্র দেয়া হবে আপনাকে হায়ার করার অনুমতি প্রদান করে।

৪। এর এই নুলাবস্তা বা ছাড়পত্রটি কোম্পানী আপনাকে ইমেইল করে দিবে এবং আপনার আর কি কি ডকুমেন্টস লাগবে তার একটি লিস্টও দিয়ে দিবে।

৫। এখন আপনাকে এই নুলাবস্তা বা ছাড়পত্রের সাথে অন্যান্য ডকুমেন্টস একত্রিত করে সম্পূর্ণ একটি ফাইল রেডি করে বাংলাদেশের গুলশানে যে ইতালি দুতাবাস রয়েছে সেখানে জমা দিতে হবে। তারা এই সমস্ত ডকুমেন্টস গুলো চেক করে আপনার জন্য একটি ভিসা ইস্যু করবে।

আবেদন প্রক্রিয়ার বিস্তারিত তথ্য সহ খরচ এবং কাজের বিষয়গুলো জানতে এই লিংকে ক্লিক করুন।

ইতালি কৃষি ভিসা নিয়ে বিস্তারিত জানার জন্য আর্টিকেলটি পড়ে আসুন। ইতালির ২৩টি কাজ যা নারী পুরুষ সবার জন্য আর্টিকেলটি পড়ে আসুন।

ভিএফএস গ্লোবালের নাম আপনারা নিশ্চয় শুনেছেন। VFS GLOBAL মাধ্যমে বিশ্বের যে কোনো দেশ থেকেই ফাইল জমা দেয়া যায় আপনারা চাইলে ওয়েবসাইটটি ভিজিট করে আসতে পারেন।

আমাদের বাংলাদেশেও ভিএফএস গ্লোবাল রয়েছে। তাদের অফিসে গিয়েও সরাসরি যোগাযোগ করতে পারেন। নিশ্চিন্তে যোগাযোগ করুন এরা বিশ্বব্যাপী স্বীকৃত।

সবশেষ কথা

এখানে একটা বিষয় আপনারা জেনে রাখুন ইতালিতে বর্তমানে নিজে নিজে আবেদন করতে পারবেন না যদি আপনি ইতালি কোনো কোম্পানী থেকে নুলাবস্তা না পান।

যদি সেখানে আপনার বিশ্বস্ত কোনো পরিচিত সুভাকাঙ্খি থাকে তাহলে তার মাধ্যমে অথবা কোনো বিশ্বস্ত এজেন্সির মাধ্যমে আপনি আবেদন করতে পারবেন।

আমি আপনাদের আবেদন প্রক্রিয়াগুলো কিভাবে সংগঠিত হয় সে বিষয়টি জানানোর চেষ্টা করেছি যেন, আপনারা দালালদের অতিরিক্ত টাকা বা ভুয়া প্ররোচনায় নিমজ্জিত না হন।

আমার কিছু কথা

তথ্যগুলি আপনার উপকারে এসে থাকলে দয়াকরে পেজটি শেয়ার করে দিবেন। বিনীত অনুরোধ রইলো। এতে অনেকের উপকার হবে। তারা সঠিক তথ্যের জন্য হয়রানি হবেনা।

আমি বিশ্বের বিভিন্ন দেশের ভিসা নিয়ে লিখি আপনাদের জন্য। চেষ্টা করি শতভাগ সঠিক তথ্য দেয়ার ভুল ত্রুটি সবারই হয়। আমিও মানুষ আমারও ভুল ভ্রান্তি থাকবে দয়া করে সেগুলো ক্ষমার দৃষ্টিতে দেখবেন।

কোনো প্রশ্ন থাকলে আমাদের কমেন্ট বক্সে জানাবেন ইনশাল্লাহ আমরা উত্তর দেয়ার চেষ্টা করবো।

সকল ধরনের ভিসার তথ্য পেতে আমার ফেসবুক পেজটি লাইক করে রাখুন।

Facebook page link: Article Motion

ইতালি যেতে কত টাকা লাগে?

২০২৩ সালে বাংলাদেশ থেকে ইতালি সিজনাল ভিসায় সাড়ে তিন লাখ থেকে সাড়ে চার লাখ টাকার মতো খরচ হতে পারে। তবে এর কিছুটা কম বেশি হতে পারে।

ইতালিতে কাজের ভিসার বেতন কত?

নির্দিষ্ট করে বলা যায়না কারণ আপনার অভিজ্ঞতার উপর নির্ভর করে। তবে ঘন্টা হিসাবে ধরলে সর্বনিম্ন ৫ ইউরো থেকে সর্বোচ্চ ১০ ইউরো হতে পারে। অভিজ্ঞদের ক্ষেত্রে আরো বেশিও হতে পারে।

ইতালি ভিসার দাম কত?

ইতালিতে বিজনেস এবং ট্রাভেল ভিসার জন্য বারো হাজার সত্তর (১২০৭০/-) টাকা, ফ্যামিলি ভিসার জন্য পনের হাজার ছয়শত সত্তর (১৫৬৭০) টাকা, এবং কাজের ভিসার জন্য নয় হাজার সত্তর (৯০৭০) টাকা। তাছাড়া অন্যান্য যাবতীয় খরচ সহ মোট খরচের পরিমাণ বৃদ্ধি পাবে।

২০২৩ সালে ইতালি ভিসার আবেদন ফরম কোথায় পাওয়া যাবে?

ইতালি ভিসা আবেদন ফরম ডাউনলোড করতে ভিএফএস গ্লোবালের সাইট থেকে ফরমটি ডাউনলোড করে নিন। পেজে যাওয়ার পর দেখবেন “২। আপনার আবেদন করুন” এখানে বিস্তারিত বাটনে ক্লিক করুন Italy Visa Application Form Download

Similar Posts

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *